ছোটদের শিষ্টাচার শিক্ষা (পঞ্চম অধ্যায়)

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান - খ বিভাগ- শিশু বিকাশ ও পারিবারিক সম্পর্ক | NCTB BOOK
840
Please, contribute by adding content to ছোটদের শিষ্টাচার শিক্ষা.
Content

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর দাও

রোজি ও রুমি স্কুলে যাওয়ার পথে এক বৃদ্ধকে দেখল রাস্তার পাশে বসে ঠকঠক করে কাঁপছেন। রোজি গায়ের চাদর ওই বৃদ্ধের গায়ে দিয়ে তারা তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসে এবং বাড়ি ফেরার পথে তাদের স্কুল শিক্ষককে পেয়ে দাঁড়িয়ে সালাম দিল।

মানবীয় গুণাবলি (পাঠ ১)

756

প্রতিদিন আমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক, পাড়া-প্রতিবেশী, ছোট-বড় অনেকের সাথেই ভাব বিনিময় ও যোগাযোগ করতে হয়। এই ভাব বিনিময় ও যোগাযোগের মাধ্যমেই শিষ্টাচার প্রকাশ পায়। অপরের সুবিধা-অসুবিধা দেখা, অপরের মতামত, অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখানো এবং বুচিসম্মত ব্যবহারই শিষ্টাচার। শিষ্টাচার সভ্যতার প্রতীক, অন্তরের সৌন্দর্য। শিষ্টাচার প্রকাশের মাধ্যমে মনের সুন্দর দিকগুলো ফুটে ওঠে।

শৈশব কাল থেকেই শিষ্টাচার চর্চা বা অভ্যাস করতে হয়। জীবনকে সুন্দর ও সাফল্যময় করতে হলে, উন্নত জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অবশ্যই শিষ্টাচারী হতে হবে। তোমরা যদি ভদ্রতা, শ্রদ্ধাবোধ, সৌন্দর্যবোধ, শালীনতা ও আদব-কায়দা বজায় রেখে সমাজে চলো তা হলেই শিষ্টাচার প্রকাশ পাবে। তোমরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। তোমাদের সভ্য, সঠিক, সুন্দরভাবে গড়ে ওঠার মধ্যেই রয়েছে দেশ ও জাতির কল্যাণ।
মানুষ হিসেবে যে আচরণগুলো আমরা সবাই একে অপরের কাছে আশা করি তাই মানবীয় আচরণ বা গুণাবলি। যেমন- সহযোগিতা, সহানুভূতিশীলতা, সহমর্মিতা, ধৈর্যশীলতা, নম্রতা, ভদ্রতা, বিনয় ইত্যাদি। মানবীয় গুণাবলি পরিবার থেকে অর্জিত হয়। পরিবারে, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে মেলামেশার মাধ্যমে মানবীয় গুণগুলো প্রকাশ পায়।

দলগত খেলার মাধ্যমে মানবীয় গুণাবলি সহজে বিকাশ লাভ করে। তোমরা যখন দলগতভাবে খেল তখন তোমাদের একে অপরকে সহযোগিতা করতে হয়। খেলার নিয়মকানুন মেনে সততা ও ন্যায়পরায়ণতার পরিচয় দিতে হয়। দলের প্রতি বিনয়ী, সহানুভূতিশীল, ধৈর্যশীল এবং বন্ধুভাবাপন্ন হতে হয়। কেউ ব্যথা পেলে সেবা করতে হয়, সহমর্মিতা দেখাতে হয়। আবার তোমরা যদি নিজ স্বার্থ কিছুটা ত্যাগ করে অন্যের উপকার করতে পার তা হলে তোমাদের উদারতা প্রকাশ পায়। সুতরাং দেখা যায় মানবীয় গুণাবলি তোমাদের চরিত্রকে উন্নত করে।

এখন আমরা সাদিয়া সম্পর্কে জানব। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া। তার নম্রতা, ভদ্রতা, ন্যায়পরায়ণতা, শ্রদ্ধাবোধ, সহযোগিতা, উদারতা, বন্ধুত্বপূর্ণ আচার-ব্যবহার আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক, সহপাঠী ও বিদ্যালয়ের সবাইকে মুগ্ধ করে। সে সব সময় বড়দের সালাম দেয় ও সম্মান করে, অতিথিদের সমাদর করে। দরিদ্র আত্মীয়-স্বজন, দরিদ্র প্রতিবেশী ও বাড়ির গৃহকর্মীর প্রতি বেশ সহানুভূতিশীল ও বিনয়ী। সে ছোটদের স্নেহ করে ও ভালোবাসে।

সাদিয়া সহপাঠীদের সহযোগিতা করে। কখনও মিথ্যা কথা বলে না ও অন্যায় আচরণ করে না। কথা দিলে সেটা রক্ষা করে। নিজের দোষ-ত্রুটি সহজেই স্বীকার করে নেয়। তাই ছোট-বড় সবাই তাকে পছন্দ করে। সাদিয়া তার মা-বাবাকে খুব শ্রদ্ধা করে এবং আদর্শ হিসেবে অনুকরণ করে।

তোমরা দেখতে পারছ সাদিয়ার মানবিক গুণের জন্য সবাই তাকে পছন্দ করছে। তার মধ্যে যদি হিংসা, বিদ্বেষ, অহমিকা, দাম্ভিকতা থাকত, সে যদি মিথ্যা কথা বলত, কথা দিয়ে সেই কথা মতো কাজ না করত নিশ্চয়ই কেউ তাকে পছন্দ করত না। তাই তোমাদের সব সময় মানবীয় গুণাবলি অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। যাতে সৃষ্টিকর্তা ও সব মানুষের প্রিয় হতে পার।

কাজ-১ : সবাই যে আচরণগুলো পছন্দ করে এবং যে আচরণগুলো পছন্দ করে না তার তালিকা করো।
Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর দাও

দরিদ্র সহপাঠী রানা অসুস্থতার কারণে বেশ কয়েকদিন যাবত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। বন্ধু জয় তার অন্যান্য সহপাঠীদের সহযোগিতায় রানার চিকিৎসার খরচ যোগাড় করে।

সকলের ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে
খ্যাতি অর্জনের জন্যে
নিজেকে আকর্ষণীয় করার জন্যে
উদারতা দেখানোর জন্যে
অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর দাও

দরিদ্র সহপাঠী রানা অসুস্থতার কারণে বেশ কয়েকদিন যাবত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। বন্ধু জয় তার অন্যান্য সহপাঠীদের সহযোগিতায় রানার চিকিৎসার খরচ যোগাড় করে।

সকলের ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে
খ্যাতি অর্জনের জন্যে
নিজেকে আকর্ষণীয় করার জন্যে
উদারতা দেখানোর জন্যে
নিজ স্বার্থ রক্ষা করে
অন্যের উপকার করে
ভালোভাবে লেখাপড়ার মাধ্যমে
ঘরের কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে

বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শিক্ষকের প্রতি সম্মান (পাঠ ২)

925

তোমাদের চেয়ে বয়সে যারা বড় তারাই তোমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে মা-বাবা, বড় ভাই- বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানি, খালা-খালু, ফুফু-ফুফা, চাচা-চাচি, মামা-মামি সবাই তোমাদের আত্মীয়- স্বজন। এছাড়া শিক্ষক, পাড়া-প্রতিবেশী সে যে পেশারই হোক না কেন, যারা তোমাদের চেয়ে বয়সে বড় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানো তোমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং এটা ভদ্রতামূলক আচরণ। বড়দের আদেশ-উপদেশ মেনে চলাকেই তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া বোঝায়। তোমরা যদি শ্রদ্ধাশীল হও, তাহলেই বড়রা তোমাদের ভালোবাসবে। শ্রদ্ধা হতেই ভালোবাসার জন্ম।

তোমরা হয়তো বলতে পারো শ্রদ্ধা ও সম্মান কীভাবে দেখাব?

শ্রদ্ধা দেখানোর উপায়

  • বয়োজ্যেষ্ঠদের দেখলে সালাম বা অভিবাদন জানাবে। কুশল বিনিময় করবে।
  • বড়রা যখন কথা বলবেন তখন মন দিয়ে শুনবে। কথার মাঝে কোনো কথা বলবে না।
  • বড়দের আদেশ উপদেশ মেনে চলবে এবং প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে।
  • বড়দের কোনো কথা বা কাজ তোমার পছন্দ না হলে সম্মানের সাথে তোমার মতামত জানাবে।
  • বাড়িতে বৃদ্ধ দাদা-দাদি, নানা-নানি থাকলে সেবা করবে এবং সঙ্গ দিবে, গল্প করবে। কারণ তারা বয়সের কারণে নিজের কাজও নিজে করতে পারেন না, একাকিত্বে ভোগেন। এছাড়া তাদের সাথে গল্পের মাধ্যমে তোমরাও অনেক জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

তোমার বাবা-মা যেভাবে তোমাদের লালন-পালন করছেন, তোমার দাদা-দাদি/নানা-নানিও সেভাবেই তোমার বাবা-মাকে লালন-পালন করেছেন। তোমরা তাঁদের অনেক আদরের। অতি শৈশব থেকে তাঁরা তোমাদের অনেক আদর ও স্নেহ করেন, অনেক দোয়া করেন। সুতরাং বৃদ্ধ বয়সে তাঁরা যাতে কোনো দুঃখ কষ্ট না পান সে দিকে খেয়াল রাখাও তোমাদের কর্তব্য। বড়দের প্রতি তোমাদের সৌজন্যমূলক আচরণ ও শ্রদ্ধাবোধ তাঁদের স্নেহ, ভালোবাসা অর্জনে তোমাদের জন্য সহায়ক হবে এবং সামাজিক জীবন সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হবে।

কাজ - ১ একজন সন্তানের তার মা-বাবাকে কীভাবে শ্রদ্ধা ও সম্মান করা উচিত তার উপর একটি পোস্টার তৈরি করো।

কাজ- ২ বৃদ্ধ দাদা-দাদি বা নানা-নানির প্রতি তোমার করণীয় সম্পর্কে লেখো।

শিক্ষকের প্রতি সম্মান- শিক্ষক হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষক জ্ঞান দান করেন আর তোমরা সেই জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে জীবনকে গড়ে তোল। পিতা-মাতার পরেই শিক্ষকের স্থান। শিক্ষকের প্রতি প্রকৃত সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ নিয়েই তোমাদের পাঠ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষকগণ সন্তানের মতো কল্যাণ কামনা করে ছাত্রদের গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তোমরা শিক্ষকের আদর্শ মেনে চলবে। শিক্ষক যখন পাঠ দেন তখন মনোযোগী হবে। নম্র ও ভদ্র আচরণ করবে। এগুলো তোমাদের কর্তব্য।

ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ফাহিম ক্লাসে শিক্ষকের উপস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাতে একটুও দেরি করে না। পাঠদানকালে সে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে শিক্ষকের কথা শোনে। শিক্ষকের দেওয়া শ্রেণির কাজ, বাড়ির কাজ সে সময় মতো সম্পাদন করে। এভাবে সে শিক্ষকের নির্দেশ পালন করার মাধ্যমে শিক্ষককে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে।

শুধু তাই নয়, সে শ্রেণিকক্ষ এবং স্কুলের বাইরেও শিক্ষকদের একই ভাবে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানায়। তার এই ধরনের আচরণে সবাই তার প্রশংসা করে। সুতরাং শিক্ষকের সাথে তোমাদের সম্পর্ক হবে ঘনিষ্ঠ ও সম্মানজনক। এতে উন্নত ও কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। যা সকলের কাম্য।

কাজ-৩ : স্কুলে এবং স্কুলের বাইরে তুমি কিভাবে শিক্ষককে সম্মান দেখাবে বর্ণনা করো।
Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর দাও

রনিদের বাড়িতে তার দাদি থাকেন। রনি দাদিকে অনেক সময় দেয়, তার কাজে সহযোগিতা করে। সে তার দাদির কথা মন দিয়ে শোনে।

ছোটদের প্রতি ভালোবাসা
বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি শ্রদ্ধা
সহপাঠীদের প্রতি কর্তব্য
প্রতিবন্ধীদের প্রতি ভালোবাসা
শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখাতে হবে
ভয় পেতে হবে
দূরে থাকতে হবে
মিলেমিশে থাকতে হবে

সমবয়সীদের প্রতি আচরণ, ছোটদের প্রতি দায়িত্ব ও স্নেহ (পাঠ ৩)

437

আমরা সবাই সঙ্গপ্রিয়। পরস্পর মিলেমিশে থাকার ফলেই আমাদের জীবন সুন্দর হয়। আর এই পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি থাকে সমবয়সীদের মধ্যে। কারণ সমবয়সীদের মধ্যে যেমন বয়সের মিল থাকে তেমনি মনেরও অনেক মিল থাকে। যাদের মধ্যে মনের মিল বেশি তাদের মধ্যেই সৃষ্টি হয় বন্ধুত্বের। বন্ধুদের

সাথে আমরা মনের ভাব আদান-প্রদান করি। তাই যাদের আচরণ ভালো, অন্যের ক্ষতি করে না, নিয়ম মেনে চলে, বিনয়ী, সহানুভূতিশীল ও সহমর্মিতাবোধ আছে, বন্ধু হিসেবে তারাই উত্তম। এছাড়া বন্ধু নির্বাচনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস থাকা।

রাসেল ও মিলন সহপাঠী ও ভালো বন্ধু। অন্যান্য সহপাঠী সবাই তাদের পছন্দ করে। তারা পড়াশোনা ও খেলাধুলায় সেরা। পড়াশোনায় তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আছে তবে কোনো হিংসা-বিদ্বেষ নেই, আছে আত্মবিশ্বাস। স্কুলে দুই ফুটবল টিমে তারা খেলে। তারা দু'জনেই আদর্শ নিয়ে চলে। কাজে কর্মে ধৈর্যশীল, অন্যের কষ্টে সহানুভূতি দেখায় ও সাধ্যমতো সাহায্য করে। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাদের এই সমস্ত গুণের জন্য সহপাঠী এবং দলের সবাই তাদের প্রতি মুগ্ধ। একদিন মিলনের দল খেলায় পরাজিত হয়। দলের অনেকেই এটা মেনে নিতে পারছে না। মিলন দলের সবাইকে নিয়ে নিজেদের দুর্বলতা, খেলার নিয়ম-নীতি নিয়ে আলোচনা করে। ফলে সবাই পরাজয় মেনে নেয়। মিলনের বিচক্ষণতাই সকলের আগ্রাসী মনোভাব দমন করে। রাসেল ও মিলনদের ক্লাসে এমন কিছু ছেলে ছিল যারা কলহপ্রিয় ও মারামারি করতে পছন্দ করে। ওরা দুই বন্ধু ঠিক করল ওদেরকে দলে খেলতে নিবে। তারা দুষ্ট ছেলেদের দুই দলে ভাগ করে নিল। খেলার নিয়ম-নীতি, শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ দিলো।
এভাবে কিছুদিন খেলার ফলে দেখা গেল দুষ্টু ছেলেদের মন মানসিকতার অনেক উন্নতি হলো।

দেখতে পারছ তোমাদের বয়সে বন্ধুর প্রভাব অনেক বেশি। সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় কৈশোর বয়সে এমন অনেক চাহিদা থাকে যা মা-বাবা, শিক্ষক পূরণ করতে পারে না। সে সকল ক্ষেত্রে সমবয়সী বন্ধু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

কাজ-১ : সমবয়সীদের সাথে আচরণ এ বিষয়ে তোমার নিজস্ব মতামত লিপিবদ্ধ করো।

ছোটদের প্রতি দায়িত্ব- তোমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তোমাদের স্কুলে, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা তোমাদের চেয়ে বয়সে ছোট। তাদের প্রতি তোমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে।

  • তোমরা ছোটদের স্নেহ ও ভালোবাসা দিবে।
  • ভালো কাজের উপদেশ দিবে।
  • মন্দ কাজ করতে নিষেধ করবে এবং মন্দ কাজের কুফল বুঝিয়ে বলবে।
  • তাদের মধ্যে ন্যায়-অন্যায় বোধ ও আত্মবিশ্বাস জাগ্রত করার চেষ্টা করবে।
  • তাদেরকে প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে। তবে তোমাদেরও ছোটদের সামনে ভালো কাজের দৃষ্টান্ত রাখতে হবে। যা দেখে ছোটরা তোমাদের অনুসরণ করবে। কারণ ছোটরা সব সময় বড়দের অনুকরণ করে শেখে।

দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নিপা মাঠে খেলতে যেয়ে পায়ে ব্যথা পেয়ে কাঁদতে থাকে। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মালতি ও তার বান্ধবীরা নিপাকে কোলে তুলে শিক্ষকদের রুমে নিয়ে যায়, বরফ এনে পায়ে ধরে, বাতাস করে, রুমাল ভিজিয়ে তার মুখ মুছিয়ে দেয়। এতে আস্তে আস্তে নিপা সুস্থ হয়ে ওঠে। বড় আপুদের যত্ন স্নেহ, ভালোবাসা ও সহানুভূতি নিপাকে মুগ্ধ করে।

মালতি দেখল ছোট একটি ছেলে কলা খেয়ে খোসাটি রাস্তায় ফেলল। মালতি ছেলেটিকে ডেকে তার নাম জিজ্ঞাসা করল এবং খোসাটি ডাস্টবিনে ফেলতে বলল। কলার খোসায় পা পিছলে পড়ে কেউ ব্যথা পেতে পারে, এছাড়া যেখানে সেখানে ময়লা ফেললে পরিবেশ নোংরা হয়। ছেলেটি মালতির কথা বুঝতে পারল এবং আর কখনও এমন করবে না বলে প্রতিজ্ঞা করল।

কাজ-২ নিপা ও মালতির কাছ থেকে তুমি কী শিখলে বলো।

Content added || updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর দাও

মৌটুসী তার বন্ধুদলে মিলে বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা করে। বন্ধুদের সাথে অনেক সময় কাটায়। সে রিভিন্ন রকম ভালো আচরণ শিখেছে তাদের কাছ থেকে।

খেলাধূলায় সময় কাটানো
বন্ধুদলের প্রভাব
আবেগীয় বিকাশ
বন্ধুদের ওপর নির্ভরতা

প্রতিবন্ধীদের প্রতি আচরণ, পারিবারিক গোপনীয়তা রক্ষা (পাঠ ৪)

283

আমরা আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ দেখি যাদের হাত-পা নাই, চোখে দেখে না, কানে শোনে না, কথা বলতে পারে না, দেহের গঠন স্বাভাবিক নয়, বুদ্ধি কম। তাদের অনেক কষ্ট। তবে তাদের এই অবস্থার জন্য কিন্তু তারা দায়ী নয়। সবাই চায় সুন্দরভাবে বাঁচতে। এই ধরনের প্রতিবন্ধীদের প্রতি তোমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে।

তোমাদের সুন্দর আচরণই প্রতিবন্ধীদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দিবে। তাই তারা যাতে অবহেলিত না হয়, যাতে সমাজের একজন হতে পারে, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করতে পারে, পড়াশোনা শিখতে পারে। সেজন্য আমাদের সবার এদের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে।

রতনদের স্কুলে প্রতিবন্ধী একজন ছাত্র রয়েছে। ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। নাম মিলন, সে হুইল চেয়ারে করে স্কুলে আসে। রতন ও তার সহপাঠীরা হুইল চেয়ার ঠেলে অনেক কষ্ট করে তাকে বারান্দায় তুলে ক্লাসে নিয়ে যায়। রতন চিন্তা করল, একটা র‍্যাম্প থাকলে তাদের এত কষ্ট হতো না। বিষয়টি নিয়ে সে শ্রেণি-শিক্ষকের সাথে আলাপ করে এবং তারা কয়েক বন্ধু মিলে মাটি দিয়ে ঢাল তৈরি করে। পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তার উপরে ইট বিছিয়ে সিমেন্ট করে র‍্যাম্প তৈরি করে দেয়। ফলে মিলনকে তার সহপাঠীরা সহজেই হুইল চেয়ার ঠেলে ক্লাসে নিয়ে যেতে পারে। সহপাঠী, শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাই মিলনকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়। সমাজে অনেক দৃষ্টি, শ্রবণ, বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে। তোমরা সব সময় তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে, প্রয়োজনে সহযোগিতা করবে, খেলাধুলা করবে, সঙ্গ দিবে, রাস্তা ঘাট পারাপারের সময় সাহায্য করবে। তাদের সাথে এমন আচরণ করবে যাতে তারা নিজেদের অসহায় মনে না করে।

কাজ-১ একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর প্রতি তোমার আচরণ কেমন হবে?

পারিবারিক গোপনীয়তা রক্ষা- তোমরা সবাই মা-বাবা, ভাই-বোন নিয়ে পরিবারে বাস কর। অনেকের পরিবারে আত্মীয়-স্বজনও থাকে। পরিবারে তোমাদের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ ও স্নেহ, ভালোবাসার দৃঢ় বন্ধন থাকে। তারপরেও পরিবারে একত্রে বাস করতে গেলে সদস্যদের মধ্যে মনোমালিন্য, মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। তোমাদের উচিত এই বিষয়গুলো গোপন রাখা। কারণ বাইরে প্রকাশ পেলে পরিবারের মান, মর্যাদা ও সম্মান নষ্ট হতে পারে। এছাড়া অর্থ সংক্রান্ত ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে যদি তোমরা কিছু জেনে যাও, তাহলে সেটা নিজের মধ্যেই গোপন রাখবে। এই বিষয়গুলো বাইরের মানুষ জেনে গেলে পরিবারের নিরাপত্তা নষ্ট হয়, বিপদও ঘটার আশঙ্কা থাকে। সুতরাং যে বিষয়গুলো পরিবারের বাইরের কেউ জানলে পরিবারের মান, মর্যাদা, সম্মান নষ্ট হতে পারে বা পরিবারে বিপদ আসতে পারে, সেগুলোই পরিবারের গোপন বিষয়। তোমরা একটি গল্প শুনলেই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারবে।

প্রমির মা-বাবার মধ্যে একদিন মতবিরোধ হয়। প্রমি সে কথা প্রতিবেশী বান্ধবীকে বলে। বান্ধবী তার মায়ের সাথে গল্প করতে গিয়ে প্রমির মা-বাবার বিষয়টি বলে ফেলে। কয়েকদিন পর প্রমির মায়ের সাথে বান্ধবীর মায়ের দেখা হয়। বান্ধবীর মা মতবিরোধের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করে।

এতে প্রমির মা বেশ লজ্জাবোধ করেন। এই ঘটনা থেকেই তোমরা বুঝতে পারছ পরিবারের এমন কিছু বিষয় আছে, যা বাইরে আলোচনা করা উচিত নয়। তাই পরিবারের একান্ত বিষয়গুলো নিজের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেই থাকা আবশ্যক। তবে তোমরা অনেক সময় বন্ধুদের সাথে নিজ নিজ পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলাপ করো। সেই ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবে বন্ধুর কাছে যেন তোমার পরিবারের সদস্যদের মান মর্যাদা কমে না যায়। তবে পরিবারের একান্ত গোপন যে বিষয়গুলো পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কে অবনতি ঘটায় বা ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে বলে তোমার মনে হয়, সেটা তুমি মা-বাবা কিংবা পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ বা নির্ভরযোগ্য সদস্যের সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে পার। কারণ পরিবারের যে ঘটনাগুলো সম্পর্কের অবনতি ঘটায়, সেটা খোলামেলা অলোচনার মাধ্যমে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো যায় এবং পরিবারের শান্তি, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যায়। পরিবারের শান্তি, শৃঙ্খলা রক্ষায় ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তোমারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নের উত্তর দাও

নিশাতের সহপাঠী কামাল শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে স্কুলে একা যেতে পারে না। প্রতিবেশী হওয়ায় নিশাত প্রতিদিন কামালকে স্কুলে নিয়ে যায় এবং পড়াশোনায় সাহায্য করে।

অনুশীলনী

105
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১. শিষ্টাচারের মাধ্যমে কী প্রকাশ পায়?
ক. সৃজনশীলতা
খ. দৈহিক সৌন্দর্য
গ. বুদ্ধিমত্তা
ঘ. অন্তরের সৌন্দর্য

২. বন্ধুত্বের সবচেয়ে বড় পরিচয় কী?
ক. সহানুভূতি
খ. সহযোগিতা করা
গ. ভালো ব্যবহার
ঘ. পারস্পরিক বিশ্বাস

নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ নং ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:

রনি তার বন্ধুদের সাথে খেলা করছে। দুইটি দুষ্ট ছেলে খেলতে চাইলে কেউ নিতে চাইল না। কিন্তু রনি বলল আজ আমি খেলা দেখি আর ওদের দুইজনকে খেলায় নাও। রনি তাদের বলেছিল খেলার নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
৩. রনির এ মনোভাবে কিসের প্রকাশ ঘটে?
ক. স্বার্থত্যাগ
খ. সহানুভূতিশীলতা
গ. ন্যায়বোধ
ঘ. আদর্শবোধ

8.দুষ্ট ছেলেদের মানসিকতায় যে পরিবর্তন ঘটতে পারে-
i. হিংসা বিদ্বেষ দূর হওয়া
ii. নৈতিকতার উন্নয়ন ঘটা
iii. সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii
গ. i ও ii
ঘ. i, ii ও iii

১.৬ষ্ঠ শ্রেণির কনক যথাসময়ে ক্লাসে আসে। ক্লাস শুরু হলে কনক প্রথম সারিতে বসে ক্লাস করছে।
কিছুক্ষণ পর সাহিদা ক্লাসে ঢুকে দেখে প্রথম সারির বেঞ্চে জায়গা নেই। তখন সে কনকের ব্যাগটি ২য় সারির বেঞ্চে রেখে কনককে যেতে বলে। কনক প্রথমে অসন্তুষ্ট হলেও শ্রেণিতে সমস্যা সৃষ্টি হবে ভেবে ২য় সারিতে চলে যায়। শ্রেণি-শিক্ষক বিষযটি লক্ষ করেন এবং বলেন, প্রত্যেকের পড়ালেখার সাথে সাথে উন্নত মানবীয় গুণাবলির অধিকারী হওয়া উচিত।
ক. মানবীয় আচরণ কাকে বলে?
খ. দলগত খেলার মাধ্যমে মানবীয় গুণাবলির সহজে বিকাশ লাভ করে কেন?
গ. কনকের ব্যবহারে কোন ধরনের শিক্ষার প্রভাব দেখা যায়- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. শিক্ষকের বক্তব্যের আলোকে সাহিদার ব্যবহারকে মূল্যায়ন করো।

২.নিচের চিত্রটি দেখো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

ক. মানুষ গড়ার কারিগর কে?
খ. বড়দের প্রতি কিভাবে শ্রদ্ধাশীল হওয়া যায়- বুঝিয়ে লেখো।
গ.চিত্রে নির্দেশিত বালকটির আচরণ কোন ধরনের শিষ্টাচারকে নির্দেশ করে- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. বালকটির এই আচরণ সমাজে সকলের মাঝে সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক- আলোচনা করো

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...